রবিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০১৪

বেশি প্রকাশ পাওয়া শক্তিমত্তা দুর্বলতারই বহিঃপ্রকাশ মাত্র

[লেখাটা জ্ঞানপিপাসুদের জন্য একটু হলেও সচেতন করবে।]



উপরে দেখছেন, দুই বাড়ির মাঝের যায়গাটাতে সূর্যের কিরণ দেওয়ার দৃশ্য। এই ছবিটা তুলেছি আমি একটা বিষয়কে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতে আবিষ্কার করতে। বিষয়টি হল, বেশি প্রকাশ পাওয়া শক্তিমত্তা দুর্বলতারই বহিঃপ্রকাশ মাত্র। আবিষ্কৃত হল আমার মোবাইল ক্যামেরার মাধ্যমে। আগে বলে নেই, আমার মোবাইল ক্যামেরাটা ২ মেগাপিক্সেল ক্ষমতা সম্পন্ন।

এখন শীতের মৌসুম। সকালে রোদ পোহাতে বেশ ভাল লাগে আমার। আজ প্রচন্ড শীত পড়েছে। ভোর থেকেই সূর্যের একটু তাপের জন্যই বাড়ি থেকে বের হয়ে পাশের ক্ষেতে দাঁড়িয়ে আছি। চঞ্চলা হাতটা সারাক্ষণই কি যেন একটা করতে চায়। বহু প্রত্যাশিত সেই সূর্যেটা উঁকি মারতেই মন আমার আনন্দে ভরে গেল। আমি আগ্রহ ভরে সূর্যের তাপ বৃদ্ধির অপেক্ষা করছিলাম শরীরে একটু তা দিতে। হঠাৎ আনমনাই কেন যেন মোবাইল ক্যামেরাটা অন করে সূর্যটার ছবি উঠিয়ে ফেললাম।


ছবিটাকে জুম করে দেখি সূর্যের আলোর সাথে কি যেন অতিরিক্ত একটা সৌন্দর্য। মনে করেছি, ভালই তো! আমার ক্যামেরায় ভাল ইফেক্ট হয়! আমি তো খুশিতে বাক বাক! তার পর আবার শুধু আলোটার ছবি তুলতে আগ্রহ সৃষ্টি হল। ক্যামেরাটা আবার অন করি। এবার অনেকগুলো সূর্যের আলোর অরিজিনাল ছবি তুললাম। ছবি তোলার কাজ শেষ। ছবিগুলো জুম করার পর একই রকমের দেখতে পেলাল। প্রতিটা ছবিতেই ভিন্ন কারুকাজ খঁচিত, ভিন্ন সৌন্দর্য্যে উজ্জ্বল। কিন্তু আমি আর সূর্যের প্রকৃত আলোটার (ইফেক্টহীন) ছবি তুলতে পারলাম না। সারা দিন ভাবলাম এই সমস্যার সমাধান। আর চেষ্টাকেও অব্যাহত রাখলাম। সন্ধ্যাবেলা দোকানে যাচ্ছি....

দেখছি সূর্য্যটা চমৎকারভাবে আলো দিচ্ছে। আর কিছু সময় গেলেই প্রতিদিনের মত রাতের আঁধারে ডুব দিবে। আমি আবার একটা ছবি উঠালাম। এবারও ঠিক একই ধরনের কিছু ব্যাতিক্রমী ইফেক্ট লক্ষ্য করলাম।


আমি আরো অনেক ক্যামেরা দিয়ে সূর্যের আলোর ছবি তুলেছি। কিন্তু এমন আজব হয়ে কখনো তুলিনি। ভাল ল্যাঞ্চের ক্যামেরায় ছবি হিসেবে আমি যেভাবে চেয়েছি, অনেকটাই পেয়েছি। কিন্তু আজ যা বুঝলাম, আমার ইচ্ছায় সূর্যের আলোর ছবি যেভাবে তুলব তার ধারের কাছেও ছবি তুলতে পারি নাই। আমার ক্যামেরাটা কম ক্ষমতা সম্পন্ন হওয়ায় আমি আমার ইচ্ছাটাকে আমার আয়ত্বে রাখতে পারলাম না।

ক্যামেরার দুর্বলতার কারণে আমি সূর্যের প্রকৃত আলোর ছবি তুলতে ব্যর্থ হলাম।

এভাবে আমরা সমাজে, রাষ্টে আরো কত কিছুই দেখি যেমন-
০ সিটিগোল্ড অরিজিনাল সোনার চেয়ে বেশি চক করে। সৌন্দর্যে বেশ উজ্জ্বল দেখায়। আসলে চিকচিক করলেই সোনা হয় না তা ব্যবহারকারী, সোনা সম্পর্কে জ্ঞানহীন ব্যক্তি বুঝবে না।

০ এমনই দুর্বলতার প্রকাশ যা আমরা দেখি এক নিমিষেই শেষ হয়ে যাবে, এই বুঝি শক্তির বেড়াজালে সব কিছু কেটে-মেরে নিঃশেষ করে দেবে। আসলে যে যত দুর্বল সে তার বোকামীর বসে তাকে তত শক্ত করে প্রকাশ করতে চায়।



০ সেই প্রকৃত সত্যবাদী সেই, যে যাঁচাই-বাঁছাই করে, চিন্তা করে স্বাভাবিক গতিতে কথা বলে। আসলে যে ক্ষুব্ধ হয়ে, শরীরকে উত্তেজিত করে মুখে প্রলাপ বকে আরেক জনকে হেনস্তা করার জন্য বেশি এবং জোরে কথা বলে, তখন বুঝতে হবে তার কথায় মিথ্যা এবং কথাটা অনেক দুর্বল।

প্রকৃত শক্তিশালী হল-
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেনঃ সেই ব্যক্তি শক্তিশালী নয়, যে মানুষকে আছাড় দেয় বরং ঐ ব্যক্তিই প্রকৃত শক্তিশালী বীর, যে ক্রোধের সময় নিজেকে সংরক্ষণ করিতে সক্ষম । (বোখারী ও মুসলিম)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন