ছুটির
পর স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে এলাম। টিফিন নেইনি বলে খুব ক্ষিধে পেয়েছে।
দুপুরের খাবার খুব তৃপ্তি সহকারে খেলাম। শরীরে ক্লান্তির ভর অনুভব করায়
বিছানায় একটু কাইলুলা করতে কাত হলাম। অনিচ্ছা সত্তেও অজানা মুহূর্তে কখন
যেন ঘুমিয়ে গেলাম..
যখন ঘুম ভাঙল ততক্ষণে সূর্যটা ডুবো ডুবো অবস্থা। চোখে চোখে চেয়ে আমাকে দেখছে মাটির দেয়ালে তারকাটা দিয়ে আটকানো দেয়াল ঘড়িটা। ঘুমের লেশ এখনো কাটেনি। কিছুক্ষণ চেয়ে থাকলাম ঘড়িটার দিকে। মুসলিম হিসেবে নামাজ জামায়াতে পড়ার কথা। তবে ঘুমের জন্য আসরের নামাজ পড়া হয়নি এখনও। আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না আমার আসরের নামাজ কাযা হয়ে যাচ্ছে!
[ঘড়িতে মিনিট হিসেবের জন্য পাঁচটি করে আর প্রতি ঘন্টার জন্য মোট ৬০টি দাগ কাটা থাকে। এগুলো দিয়ে মিনিট হিসাব করা হয়। এই পাঁচ দাগের ভেতরে আরো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাঁচটি করে দাগ কাটা থাকে সেকেন্ড হিসেব করার জন্য।]
টকটক করে বারবার ঘুরে চলছে সেকেন্ডের কাটা। আনমনাভাবে আমি দেখছি, গুনছি কাটা দাগের উপর দিয়ে চলাচলের সুন্দর নিয়ম। কাটার সাথে দাগের চমৎকার মিল আর টকটক আওয়াজ আমার কাছে ভাল লাগছিল। সেকেন্ডের কাটাটা দাগের বরাবর এসে একবার থেমে যাচ্ছে। আবার সেসেন্ড> তারপর মিনিট > এভাবে চলেছে সেকেন্ড-মিনিট-ঘন্টার কাটাগুলো।
মাত্র ২০-২২ মিনিট বাকী সূর্য ডুবে যাবে। কয়েক মিনিট এভাবে পরখ করার পর আমার হুঁশ হল, আমার তো আসর নামাজ অনাদায়ে রয়ে গেছে! সময় যে চলে যাচ্ছে সেকেন্ড> মিনিট> করে! বোধ আসার পর তাড়াতাড়ি উঠে পড়লাম। কলের পাড় গিয়ে উযু করে ঘরে এসে যায়নামাজে দাঁড়িয়ে আসরের নামাজ আদায় করলাম। আর আল্লাহকে শুকরিয়া জানিয়েছি, আল্লাহ তুমি আমাকে সুন্দর একটা বুঝ দান করেছো আজ!
মাথায়
একটা বিষয় কাজ করলঃ এভাবে করেই তো জীবন থেকে সেকেন্ড> মিনিট>
ঘন্টা> দিন> মাস> বছর> যুগ চলে যাচ্ছে। অবশেষে সাধের
প্রাণপাখিটাও উড়ে যায় অজানায় অনিচ্ছা থাকা সত্তেও। হাজারো কায়দা-কৌশল করে
কোন ভাবেই প্রিয়জনেরা সেই প্রাণটাকে ধরে রাখতে পারে না।
ভাবলামঃ
সবাই যখন এভাবেই চলে যাবে এই সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে। তো আমার আসরের নামাজের
মত কত দায়িত্বই না অবহেলায় খেকে যাচ্ছে আর কাজা রয়ে যাচ্ছে অনাদায়ে। তাই
আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ঘড়ির ছবিটা তুলে একটু সতর্ক হওয়ার জন্য
লেখাটা দিলাম। যাতে করে জীবনের প্রতিটা মুহূর্তকে সঠিক কাজের মাধ্যমে আদায়
করে নিজের জীবনকে স্বার্থক করা যায়।
وَالْعَصْرِ সময়ের কসম করে আল্লাহ বলেন,
إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ নিশ্চয়ই মানুষ মাত্র ক্ষতির সম্মুখীন। তবে এখানে শর্ত দিয়ে কিছু লোককে আশা দিয়েছেন- (ক্ষতি তাদের জন্য নয়; বরং তারা সফলকাম/স্বার্থক)
إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ
১। যারা ইমান আনে (ইমানের উপর অবিচল থাকে)
২। যারা সৎকর্ম করে (আল্লাহ ও রাসূলের দেখানো পথে)
৩। যারা পরষ্পরকে সত্যের দিকে তাগিদ দেয়/ সত্যের প্রতি উৎসাহ যোগায়
৪। এবং যারা ধৈর্যের উপদেশ দেয়/ ধৈর্য্য ধারনের উৎসাহ যোগায়
আমি দেখছি বরফ যেভাবে গলে যায়, আমার জীবনও সেভাবেই গলে যাচ্ছে। সবার জীবন, পৃথিবীর সবকিছুই এভাবে একেক করে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। থাকব না যেহেতু, আসুন! আমরা আমাদের মূলের দিকে ফিরে যাই! আল্লাহ আমাদের সত্য পথের সফলকামীদের অন্তর্ভূক্ত করুন। আমিন!
---------------------------
---------------------------
যখন ঘুম ভাঙল ততক্ষণে সূর্যটা ডুবো ডুবো অবস্থা। চোখে চোখে চেয়ে আমাকে দেখছে মাটির দেয়ালে তারকাটা দিয়ে আটকানো দেয়াল ঘড়িটা। ঘুমের লেশ এখনো কাটেনি। কিছুক্ষণ চেয়ে থাকলাম ঘড়িটার দিকে। মুসলিম হিসেবে নামাজ জামায়াতে পড়ার কথা। তবে ঘুমের জন্য আসরের নামাজ পড়া হয়নি এখনও। আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না আমার আসরের নামাজ কাযা হয়ে যাচ্ছে!
[ঘড়িতে মিনিট হিসেবের জন্য পাঁচটি করে আর প্রতি ঘন্টার জন্য মোট ৬০টি দাগ কাটা থাকে। এগুলো দিয়ে মিনিট হিসাব করা হয়। এই পাঁচ দাগের ভেতরে আরো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাঁচটি করে দাগ কাটা থাকে সেকেন্ড হিসেব করার জন্য।]
টকটক করে বারবার ঘুরে চলছে সেকেন্ডের কাটা। আনমনাভাবে আমি দেখছি, গুনছি কাটা দাগের উপর দিয়ে চলাচলের সুন্দর নিয়ম। কাটার সাথে দাগের চমৎকার মিল আর টকটক আওয়াজ আমার কাছে ভাল লাগছিল। সেকেন্ডের কাটাটা দাগের বরাবর এসে একবার থেমে যাচ্ছে। আবার সেসেন্ড> তারপর মিনিট > এভাবে চলেছে সেকেন্ড-মিনিট-ঘন্টার কাটাগুলো।
মাত্র ২০-২২ মিনিট বাকী সূর্য ডুবে যাবে। কয়েক মিনিট এভাবে পরখ করার পর আমার হুঁশ হল, আমার তো আসর নামাজ অনাদায়ে রয়ে গেছে! সময় যে চলে যাচ্ছে সেকেন্ড> মিনিট> করে! বোধ আসার পর তাড়াতাড়ি উঠে পড়লাম। কলের পাড় গিয়ে উযু করে ঘরে এসে যায়নামাজে দাঁড়িয়ে আসরের নামাজ আদায় করলাম। আর আল্লাহকে শুকরিয়া জানিয়েছি, আল্লাহ তুমি আমাকে সুন্দর একটা বুঝ দান করেছো আজ!
وَالْعَصْرِ সময়ের কসম করে আল্লাহ বলেন,
إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ নিশ্চয়ই মানুষ মাত্র ক্ষতির সম্মুখীন। তবে এখানে শর্ত দিয়ে কিছু লোককে আশা দিয়েছেন- (ক্ষতি তাদের জন্য নয়; বরং তারা সফলকাম/স্বার্থক)
إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ
১। যারা ইমান আনে (ইমানের উপর অবিচল থাকে)
২। যারা সৎকর্ম করে (আল্লাহ ও রাসূলের দেখানো পথে)
৩। যারা পরষ্পরকে সত্যের দিকে তাগিদ দেয়/ সত্যের প্রতি উৎসাহ যোগায়
৪। এবং যারা ধৈর্যের উপদেশ দেয়/ ধৈর্য্য ধারনের উৎসাহ যোগায়
আমি দেখছি বরফ যেভাবে গলে যায়, আমার জীবনও সেভাবেই গলে যাচ্ছে। সবার জীবন, পৃথিবীর সবকিছুই এভাবে একেক করে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। থাকব না যেহেতু, আসুন! আমরা আমাদের মূলের দিকে ফিরে যাই! আল্লাহ আমাদের সত্য পথের সফলকামীদের অন্তর্ভূক্ত করুন। আমিন!
---------------------------
ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড
: আসুন! আমরা আমাদের মূলের দিকে ফিরে যাই!, সময় চলে যায়, জীবন শেষ হয়ে
যাচ্ছে!, এভাবেই সব চলে যায়, প্রাণ পাখিও ঊড়ে যায়!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন