কত দিন হল, আমি বিয়ের ব্যাপারে চিন্তা করছি। কিন্তু দেশের যা অবস্থা, আমি আজ দেশে যা দেখছি, যেভাবে আমি সত্য আর মিথ্যাকে প্রকাশ করা দেখছি তাতে আমি রীতিমত অবাক হচ্ছি! বিয়ে করার কথা ভাবব কি, আমি চিন্তা করছি এই আমলে বিয়ে করলে এতো মিথ্যার সয়লাভে আবার আমার বউটাই মিথ্যা এমন কি আমার জীবনটাই মিথ্যা হয়ে যেতে পারে। তাই এই দুইটা বছর কি বিয়ের জন্য অপেক্ষা করব নাকি খুব সতর্কতার সাথে বিয়ে করেই ফেলব তা বুঝে আসছে না।
আমার মা কখনো ঢাকায় যায় নি। মাকে নিয়ে ঢাকায় চিড়িয়াখানায় যাওয়ার কথা ভাবছি ২ বছর ধরেই। এই দুই বছরেও এমন সাহস আমি পাইনি যে মাকে নিয়ে আমি ঢাকার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হতে পারি। রাস্তা, গাড়ি এক্সিডেন্ট, মানুষ মারা, গুম হওয়া, ছিনতাই, চাঁদাবাজী, খুন, অনাচার, অবিচার, পুলিশের নির্মমতা, শৃংখলাবাহিনীর নীরবতা ইত্যাদি বিচার করে কোন সুযোগ পাচ্ছি না। হওয়ার ঘটনা তা থেকে দুই বছরের জন্য মা আমাকে অপেক্ষা করতে বললেন। কিন্তু বিয়েটা যদি দুই বছরে অপেক্ষা করি, আমি কি, কিভাবে, কতটুকু কিছুই বুঝতে পারছি না!
যা হোক বিয়ের কথার জন্য মূলত নয়; নিচে দেখুন!
১। মুসলিম হয়ে আল্লাহতে আস্থা বাদ দিয়ে মাটির পুতুলে আস্থা রাখছে কত মুসলিম!
২। আইনমন্ত্রী আইনের চেয়ারে বসে বেআইনী লোকদের (চোর, মিথ্যুক, ধর্ষক, প্রতারক, ছিনতাই ইত্যাদি কার্য সম্পাদনকারীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে যাচ্ছেন। কিন্তু একজন আদর্শ নাগরিক, একজন এমপি, একজন ভাল মানুষকে নিরাপত্তার জন্য তাঁর আইন কাজে লাগে না।
৩। মুসলিম ধর্মমন্ত্রী ধর্ম-দ্বীনের তফাৎ জানেন না। আর ধর্ম নিয়ে তাঁর কোন মাথা ব্যাথা নাই।
৪। রাস্তামন্ত্রী রাস্তায় না চলে বিমানে করে আকাশ পথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। যার কারণে তিনি রাস্তার বেহাল দশা সম্পর্কে অবগত নন।
৫। স্বররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজের দলের হাতে প্রতি দিন গড়ে ২০ জন মানুষ মরলেও বর্তমান আইন-শৃংখলা সব আমলের চেয়ে ভাল বলছেন। পত্রিকা মারফত এই তো সেই দিন মাত্র জানলেন, দেশে ক্রসফায়ার হচ্ছে। তিনি জানার পরও কয়েকটা ক্রসফায়ার হয়ে গেল। আর গুম? গুম তো শুধু তলে তলে আইনে লোকেরা জানে, আর দলের লোকেরা জানে। তিনি কিছুই জানেন না।
৬। বাণিজ্যমন্ত্রী্ মন্ত্রীত্ব পদে স্বসম্মানে বহাল থাকলেও ব্যবসায়ীদের দোষ দিয়ে যাচ্ছেন। সব কিছুর দাম নাকি আরো তিন বছর বাড়তেই থাকবে! উনাদের চিন্তা কি? ক্ষমতায় এসে প্রথমেই তো নিজেদের বেতনটা আইন করে বাড়িয়ে নিলেন। আমাদের জনগণকে নিয়ে উনাদের কি লাভ? ক্ষমতাতো এইবার জোর করেই নিতে পারবে! তা না হলে আমাদের জনগণদের একটু চিন্তা করতেন। আর যত লীগরা যেভাবে ক্ষমতা দেখাচ্ছে!
আর কাকে কি বলব? স্বয়ং প্রধান মন্ত্রীই জানেন না বললেন, শেয়ার বাজার কিভাবে চলে? মন্ত্রীরা কেন একজন আরেক জনের সাথে কথা বলে না? কেন ছাত্রলীগ কথা শুনে না? তিনি জানে না জিয়ার কবর কোথায়? তিনি জানেন না জামায়াতে ইসলামীতে ধষক, মিথ্যাবাজ, ধোকাবাজ, প্রতারক, বদমাইস, খুনি, চোর, বাটপার, অশান্তি সৃষ্টিকারী, ভিনদেশ প্রেমিক ইত্যাদি নাই। যদি জানতেন, তাহলে কি এভাবে সব জামায়াতের লোকগুলোকে ধরে বিপদে পড়ে আজ মনমরা হয়ে মুখ কালো করে রাখতেন? তিনি কত কিছুই না করেছেন!
১। শিবিরের উপর চিরুনী অভিযান।
২। তাদের নামে মিথ্যা অপবাদ।
৩। তাদেরকে মেরে হাসপাতাল ভতিকরণ।
৪। বাংলাদেশ থেকে ছাত্রশিবির নিষিদ্ধ করণের পায়তারা।
৫। নিজেদের চরিত্র নিজেদের উপর চাপিয়ে দেয়া
কত মানবতার কথায় বুলি ঊড়ানোরা আজ মানবতা সংজ্ঞা না জানলেও যাঁদের হাতে মানবতার লালন তাঁদের উপর মানবতার অপবাদে ঢালাও ভাবে গ্রেফতার, হয়রানী, মিথ্যা মামলা, জেলে ভর্তি। আরো কত কী!
আরো আছে; মিথ্যা সাক্ষী ভাড়া করা, ভূঁয়া সাক্ষী প্রমাণ হওয়ায় আদালত ছাড়া মুখের জোরে (ফাঁসি দিয়া লা, আবার বিচার লাগবে কেন? লগি-বৈঠায় ফাসি কার্যকর করার বড় স্বপ্ন তাদের।
এখন আসি আসল কথায়, কেন আমি অনুভূতিহীন নই।
আমাদের ইসলামী আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তি প্রফেসর অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেবকেও উনারা শেষ পর্যন্ত বিনা অযুহাতে গ্রেফতার করেছে। বিগত তিন বছর যাবত উনারা যতগুলো মানুষ তারা অন্তত জামায়াত-শিবিরের থেকে গ্রেফতার করেছে, আজ পর্যন্ত তারা কারোর কোন অভিযোগ পর্যন্ত বের করতে পারে নি। গ্রেফতার করার পর তাঁদের বিরোদ্ধে আজে-বাজে নানান ভাবে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে, করছে। সেগুলোরই কোন সুরাহা হয়নি। তারপরো কত দুঃসাহস নিয়ে অনেক গুলো আসন আর ভিনদেশীদের দেয়া সাহসের জোরে আমাদের প্রাণপ্রিয় নেতা, বাংলাদেশে ইসলাম আনয়নের মহান সম্মানী ব্যক্তি প্রফেসর অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেবকেও অবশেষে গ্রেফতার করেছে।
আমার ভাষায়; উনাদের মাথা ঠিক আছে কি না জানি না। তবে উনারা যে অনুভূতি হারিয়ে ফেলেছেন তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। কারণ, জনগণের সরকার হয়ে দেশের জনগণের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে একচেটিয়া সব জনগণের মতামত বিরোধী কাজ করে যাচ্ছেন। সেই জনগণের আমিও একজন। কিন্তু আমি এখনো অনুভূতি হারিয়ে ফেলি নি। আমার মত অনেকেই অনুভূতিহীন নয়!